বরিশাল প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নুরুল আলমের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ: কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মুখ বন্ধ, প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা
-
প্রতিনিধি
-
আপডেট সময়:
০৯:৫৯:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
- 31

বিডি ক্রাইম এলার্ট ডেক্স
বরিশাল জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নুরুল আলমের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি তার পদক্ষেপে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভয় দেখিয়ে ও চাকরি হারানোর হুমকি দিয়ে নিজের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার এসব কর্মকাণ্ডে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন, কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছেন না।
ডা. নুরুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তিনি সরকারি অফিসের ঔষধ ও সরঞ্জামাদি তার নিজস্ব খামারে সরিয়ে নিচ্ছেন। তার নিজ এলাকা স্বরূপকাঠিতে তিনি বিশাল গাভীর খামার গড়ে তুলেছেন, যেখানে সরকারি বরাদ্দকৃত ঔষধ ও সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও, তিনি সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করছেন এবং অসহায় মেহনতি মানুষদের প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছেন। যারা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন, তাদেরকে তিনি বিভিন্ন কৌশলে ট্রান্সফার বা চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন।
ডা. নুরুল আলমের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে যে তিনি আউটসোর্সিং কর্মীদের মাধ্যমে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। তিনি অসহায় নারীদের সাথে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে তাদেরকে হোটেলে রাত্রি যাপনের প্রস্তাব দেন। যারা তার প্রস্তাবে রাজি হন না, তাদেরকে চাকরি হারাতে হয়। এছাড়াও, তিনি এল.ডি.ডি.পি প্রকল্পের ট্রেনিং না করিয়ে টাকা আত্মসাৎ করছেন এবং অযোগ্য ব্যক্তিদেরকে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে চাকরি দিচ্ছেন।
বরিশাল সদর উপজেলার এল.এফ.এ শারমিনকে তিনি তার ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। শারমিন অফিসের কাউকে পরোয়া করেন না এবং কেউ কিছু বললে ডা. নুরুল আলমের ভয় দেখানো হয়। এতে বোঝা যায় যে তার সাথেও ডা. নুরুল আলমের অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এছাড়াও, তিনি এল.ডি.ডি.পি প্রকল্পের ট্রেনিং এর ক্লাস না করিয়ে প্রতিটি জেলা থেকে তার অনারিয়াম তাকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সকল উপজেলার কর্মকর্তাদেরকে বাধ্য করেন।
ডা. নুরুল আলমের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে যে তিনি বাবুগঞ্জ উপজেলার ঘাস প্রকল্পের অনুদান বিতরণে অনিয়ম করছেন। প্রকৃত খামারিদের বাদ দিয়ে যাদের গরু, ছাগল কিছুই নেই, তাদেরকে অনুদান দিচ্ছেন। এছাড়াও, তিনি একই পরিবারের সদস্যদেরকে এল.ডি.ডি.পি প্রকল্পের নিয়োগ দিচ্ছেন, যাদের কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা বা বয়সের যোগ্যতা নেই।
এল.ডি.ডি.পি প্রকল্পের পি.জি গ্রুপের জন্য ছাগল ঘর নির্মাণ কাজে ২৫,০০০ টাকা বাজেট আসে এবং মুরগির ঘর নির্মাণের জন্য ২০,০০০ টাকা বাজেট আসে। তবে উজিরপুর ও বাবুগঞ্জ উপজেলায় ঘর নির্মাণ করেন ১৭,৫০০ টাকা করে, বাকি টাকা তিনি আত্মসাৎ করছেন। এছাড়াও, সাইনবোর্ড নির্মাণের কথা বলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও জেলা কর্মকর্তা মিলে সরকারি টাকা হালাল করে ফেলছেন।
বরিশাল জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ডা. নুরুল আলমের এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা আশা করেন যে, এ ধরনের দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে এবং অফিসে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠিত হবে।